বিকাশ লোন কারা পাবে – বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম - 2025
বিকাশ লোন কারা পাবে - জরুরী প্রয়োজন ব্যক্তিগত কাজ ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমাদের
প্রায়ই লোন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু ব্যাংকিং বা এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে
লোন পাওয়ার জন্য বেশ সময়ের প্রয়োজন হয় এবং বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র সাবমিট
করতে হয়। যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ লোন প্রদান
করার সুবিধা এনেছে। তবে এর জন্য রয়েছে বেশ কিছু শর্ত।
বর্তমান ডিজিটাল যুগে হঠাৎ টাকার প্রয়োজন হলে বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় জানা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংকের জটিল কাগজপত্র বা দীর্ঘ অপেক্ষার প্রয়োজন না
থাকায় বিকাশ লোন অনেকের জন্য একটি দ্রুত ও সহজ সমাধান হয়ে উঠেছে। এই গাইডে আমরা
দেখাব বিকাশ লোন কারা পাবে এবং কিভাবে আপনি বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে
ব্যক্তিগত লোন পেতে পারেন – সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে এবং নির্ভরযোগ্য উৎস
অনুযায়ী।
সিটি ব্যংক বিকাশ লোন
আমরা জানি পাইলট প্রোগ্রাম শেষে এখন চূড়ান্ত ভাবে চালু হয়েছে সিটি ব্যাংক এবং
বিকাশ লোন সার্ভিস ডিজিটাল ন্যানো লোন। আমাদের জানামতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক
মোবাইলে ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋন প্রদান করতে 100 কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন স্কীম গঠন
করেন। 9% সুদে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। উক্ত ঋণ সম্পূর্ণ
ভাবে মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস এর মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
কিন্তু বিকাশ ও সিটি ব্যাংক আরও পূর্বেই ডিজিটাল ন্যানো লোক নামে একটি ঋণ প্রদান
কার্যক্রম চালু করেছিল। মোবাইল এ আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গুলো লেন দেন মোবাইল
রিচার্জ, ম্যার্চেন্ট পেমেন্টসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসলেও ঋণ কার্যক্রম না
থাকার জন্য কিছুটা অসম্পূর্ণ ছিল এই খাত। তবে সিটি ব্যাংক এবং বিকাশ এর ডিজিটাল
ন্যানো লোক কার্যক্রম মোবাইলে আর্থিক সার্ভিসকে সম্পূর্ণ করেছেন।
উক্ত ঋণ এর জন্য কোন জামানত দেওয়ার দরকার হবে না। কোন ব্যক্তি জামিনদার বা নমিনির
দরকার হবে না। তবে এটি ব্যবসায়িক খাতের বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে অবশ্যই।
📌আরো পড়ুন 👉 বাংলালিংক মিনিট অফার ২০২৫
মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো লেনদেন, মোবাইল রিচার্জ, মার্চেন্ট
পেমেন্ট সহ বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে আসলেও, ঋণ কার্যক্রম না থাকার কারণে কিছুটা
অসম্পূর্ণ ছিল এই খাতটি। কিন্তু সিটি ব্যাংক ও বিকাশের ডিজিটাল ন্যানো লোন
কার্যক্রম মোবাইল আর্থিক সেবাকে সম্পূর্ণ করেছে।
এই ঋণ নিতে একজন গ্রাহকের কোনো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকার প্রয়োজন নেই। গ্রাহক
তার নিজ বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকেই ঋণের আবেদন, ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধ করতে পারবে। তবে
যেন তেন প্রয়োজনে বিকাশ লোন নেওয়া উচিত হবে না।
এই ঋণের জন্য কোন জামানত প্রয়োজন হবে না। কোন ব্যক্তি জামিনদার বা নমিনি ও
প্রয়োজন হবে না। সুতরাং এটি ব্যবসায়িক খাতের বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
বিকাশ লোন কারা পাবে
আপনি যদি একজন বিকাশ গ্রাহক হয়ে থাকলে বিকাশ অ্যাপ দিয়ে সিটি ব্যাংক থেকে ৫০০
টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন মুহূর্তেই নিতে পারবেন। যেসকল গ্রাহক বিকাশে
নিয়মিত লেনদেন করে তারাই এই লোন সুবিধা পাবেন। এছাড়া যেসব গ্রাহকরা খুব একটা
লেনদেন করে না তারা লোন নিতে পারবেনা।
তবে ঋণ প্রদানের নীতিমালা অনুযায়ী, সিটি ব্যাংক নির্দিষ্ট বিকাশ গ্রাহকদের এই লোন
সুবিধা প্রদান করবে। আপনি বিকাশ গ্রাহক হিসেবে সিটি ব্যাংক থেকে এই লোন পাবেন কি
না, তা জানতে বিকাশ অ্যাপের লোন অপশনে যান। সেখান থেকে ইন্টারেস্ট রেট, প্রসেসিং
ফি, লোন লিমিট, লোন পরিশোধের নিয়মাবলি, লোন পাওয়ার উপায়, লোন পাওয়ার যোগ্যতা
ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেখতে পাবেন। আশা করছি বিকাশ লোন কারা পাবে
তা জানতে পেরেছেন।
বিকাশ লোনের আবেদনের নিয়ম
আমরা বিকাশ লোন কারা পাবে তা জেনে নেওয়ার পাশাপাশি বিকাশ লোনের আবেদনের
নিয়ম জেনে নিব। প্রথমে আপনার ফোনের বিকাশ অ্যাপ প্রবেশ করতে হবে। তারপরে সচল
বিকাশ একাউন্ট নাম্বার দিয়ে একাউন্টে লগ ইন করতে হবে। নিচের ছবির মত দেখতে
পাবেন সেখান থেকে লোন অপশনে ক্লিক করে যদি আপনার একাউন্ট ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন
করা থাকে তাহলে আপনাকে পরবর্তী পেজে নিয়ে যাবে।
📌আরো পড়ুন 👉 রবি ব্যালেন্স চেক কোড ২০২৫
সেখান থেকে আপনি লোন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার সাথে সাথেই সহজেই
লোন পাবেন। ৩ মাস মেয়াদী এই লোনের জন্য কোনো ব্যাংক একাউন্ট বা জামানত লাগবে না
এবং কোনো কাগজপত্রের ঝামেলা ছাড়াই আপনি লোন পেয়ে যাবেন। লোন এর অর্থ পরিশোধ এর
জন্য বিকাশ একাউন্ট ব্যালেন্স থেকেই অটো-কিস্তি পরিশোধের সুবিধা পাবেন।
বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম
আপনি যদি বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আমাদের দেওয়া
আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত মনযোগ দিয়ে অনুসরণ করুণ।
- প্রথমে বিকাশ অ্যাপে লগইন করুন।
- “Loan” মেনুতে যান।
- আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী লোন অফার দেখুন।
- যে পরিমাণ টাকা নিতে চান সেটি নির্বাচন করুন।
- Terms & Conditions পড়ে “Agree” করুন।
- OTP দিয়ে কনফার্ম করুন।
- টাকা আপনার বিকাশ Wallet-এ জমা হবে।
বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার জন্য আপনার যা প্রয়োজন
- আপনার একটি একটিভ বিকাশ অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) দিয়ে KYC সম্পন্ন থাকতে হবে।
- আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে নিয়মিত লেনদেন থাকতে হবে।
- বিকাশ অ্যাপের সর্বশেষ ভার্সন ইনস্টল থাকতে হবে।
বিকাশ লোন অপশনটি চালু করবেন কিভাবে
অনেকের বিকাশ অ্যাপে লোন নামক এই অপশনটি থাকে না। আপনি যদি আপনার বিকাশ
অ্যাপে লোন অপশনটি চালু করতে চান তাহলে আপনাকে নিম্নোক্ত কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ
করতে হবে যথাঃ
- বেশি বেশি পেমেন্ট এবং লেনদেন করুন।
- বিকাশ থেকে কার্ড কিংবা কার্ড থেকে বিকাশে লেনদেন করুন।
- সব সময় বিকাশে কিছু পরিমাণ টাকা জমা রাখুন।
- আপনার একাউন্টের সাথে নমিনি যুক্ত করুন।
- বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করুন।
আপনি যদি উল্লিখিত নিয়ম পালন করেন তাহলে অল্প কিছুদিনের মধ্যে আপনিও লোন
পাওয়ার উপযোগী হয়ে যাবেন।
বিকাশ লোনের সুদের হার ও কিস্তি পরিশোধ নিয়ম
কেন্দ্রীয় ব্যংক বাংলাদেশ ব্যাংক-এর নির্দেশনা অনুযায়ী যে কোন ব্যাংক ঋণের
সুদের হার বাৎসরিক ৯% শতাংশ। বিকাশ লোনের ক্ষেত্রেও বাৎসরিক ৯% সুদের হার
প্রযোজ্য হবে। বিকাশ থেকে লোন পাওয়ার পর বিকাশের ড্যাশবোর্ড-এ গ্রাহক লোন
পরিশোধ কিস্তির পরিমাণ ও পরিশোধের তারিখ দেখতে পাবেন। বিকাশ গ্রাহক চাইলে
নির্দিষ্ট তারিখের আগে নিজেই লোনের অর্থ পরিশোধ করতে পারেবেন, এক্ষেত্রে
ইন্টারেস্টের খরচ কমের সুবিধা পাবে গ্রাহক।
বিকাশ লোন গ্রহণকারীগণ ঠিক সময়ে লোনের টাকা পরিশোধ করছে কিনা, তাও পর্যবেক্ষণ
করা হবে। পরবর্তী লোন প্রদানের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি বিবেচনা করবে। যথাসময়ে লোনের
অর্থ পরিশোধ না করলে বাৎসরিক ২% হারে লোনের পরিমাণের উপর বিলম্ব ফি প্রযোজ্য
করা হবে।
বিকাশ লোন এর সুবিধা
- তাত্ক্ষণিক টাকা পাওয়া যায়
- স্মার্টফোন ও NID থাকলেই যথেষ্ট
- আবেদন করার সাথে সাথেই লোন পাবেন
- ৩ মাস মেয়াদী লোন
- কোনো কাগজ-পত্র লাগবে না
- কোনো ব্যাংক একাউন্ট বা জামানত লাগবে না
- কোনো কাগজ-পত্র লাগবে না
- একাউন্ট ব্যালেন্স থেকেই অটো-কিস্তি পরিশোধের সুবিধা
বিকাশ থেকে কত টাকা লোন পাওয়া যায়?
এই সিটি ব্যাংক বিকাশ লোন সুবিধার আওতায় একজন গ্রাহক বিকাশ অ্যাপ দিয়ে সিটি
ব্যাংক থেকে ৫০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন এর জন্য আবেদন করতে পারবে।
বিকাশ লোন নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)
বিকাশ থেকে লোন পেতে কতদিন লাগে?
বিকাশ থেকে লোন পেতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগে যদি আপনি যোগ্য হন।
সর্বোচ্চ কত টাকা লোন পাওয়া যায়?
সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যেতে পারে
বিকাশ ডিজিটাল লোনের মেয়াদ কতদিন?
বিকাশ ডিজিটাল লোনের মেয়াদ ৩ মাস। আপনাকে ৩ মাসে ৩ টি সমান কিস্তিতে ঋণের টাকা
পরিশোধ করতে হবে।
বিকাশ লোনের ক্ষেত্রে কোন লোন প্রসেসিং ফি আছে?
পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আপাতত কোন প্রকার ঋণ প্রক্রিয়ার খরচ/ ফি নেই।
কোন পদ্ধতিতে এবং কতবার সুদ গণনা করা হবে?
চক্রবৃদ্ধি হারে দৈনিক সুদ গণনা করা হবে। আপনার আউটস্ট্যান্ডিং ঋণের উপর যতদিন
ঋণ ব্যবহার করবেন, শুধুমাত্র ততদিনের সুদ ধরা হবে। আপনি যদি নির্ধারিত তারিখের
আগে তাড়াতাড়ি ঋণ পরিশোধ করেন, তাহলে আপনার সুদের পরিমাণ ও কম হবে।
বিলম্বে পেমেন্টের জন্য কি পেনাল্টি সুদের হার আছে?
হ্যাঁ, বিলম্বে অর্থপ্রদানের জন্য সিটি ব্যাঙ্কের পেনাল্টি সুদের হার হল
বার্ষিক 2%
কেন আমি বিকাশ ডিজিটাল লোনের জন্য যোগ্য নই?
শুধুমাত্র বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন করার মাধ্যমে যারা দীর্ঘদিন
ধরে অ্যাপ ব্যবহার করে নিয়মিত লেনদেন করছেন, তারাই ডিজিটাল ঋণ পাওয়ার যোগ্য।
তাছাড়া কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট যাচাই করার মাধ্যমে
নির্বাচন করা হয় কোন ব্যবহারকারী ঋণ পাওয়ার যোগ্য।
বিকাশ লোন কিভাবে বন্ধ করবো?
আপনার সব লোন পরিশোধ করে রাখলে ভবিষ্যতে আর নতুন লোন নিলেই সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে
বন্ধ থাকে। ২০২৫ সালে বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার উপায় আরও সহজ ও স্বচ্ছ হয়েছে।
আপনি যদি দ্রুত আর ঝামেলাবিহীনভাবে কিছু টাকা প্রয়োজন হয়, তাহলে বিকাশ লোন হতে
পারে আপনার জন্য একটি কার্যকর সমাধান। তবে লোন নেওয়ার আগে অবশ্যই সুদ ও চার্জ
সম্পর্কে জেনে এবং পরিকল্পনা করে পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিন।
লেখকের শেষ মন্তব্য
তো বন্ধুরা আজ আমাদের এই পোস্টে আপনাকে জানানো হলো বিকাশ লোন কারা পাবে
এবং বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আপনি যদি বিকাশ থেকে লোন নেওয়ার
যোগ্য গ্রাহক হয়ে থাকেন। তাহলে উক্ত আলোচনা অনুসরণ করে বিকাশ লোনের জন্য আবেদন
করুন।
আমাদের দেওয়া আর্টিকেল আপনার কাছে কেমন লাগলো। অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর
এই পোস্ট বিষয়ে আপনার বন্ধুদের জানাতে একটি শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।